মহালছড়ি জ্ঞানোদয় বনবিহারে ২১ তম দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান সম্পন্ন

 


কলিন চাকমাঃ খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার মহালছড়ি জ্ঞানোদয় বন বিহারে আনন্দ উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ২১ তম মহান দানোত্তম কঠিন চীবর দানানুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে। 

৩১ অক্টোবর ও ১ নভেম্বর দুইদিন ব্যাপি এই অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে  বিকাল ৬ টার সময় ২৪ ঘন্টার মধ্যে তুলা থেকে সুতা, সুতা থেকে কঠিন চীবর ( ভিক্ষুদের পরিধেয় বস্ত্র) বুনন অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করা হয়।


২য় দিনে সকাল ৯ টায় প্রথম পর্বে শুরু হয় কঠিন চীবর দান অনুষ্ঠানের মূল অনুষ্ঠান। সকাল ৯ টার সময় উদ্বোধনী সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়। এরপর উপস্থিত ভিক্ষু সংঘের কাছে পঞ্চশীল প্রার্থনা ও পঞ্চশীল গ্রহণ শেষে  বুদ্ধ পূজা, সংঘদান ও অষ্টপরিষ্কার দানসহ বিবিধ দান করা হয়।

উক্ত অনুষ্ঠানে অত্র বিহারের অধ্যক্ষ সুমঙ্গল মহাস্থবীরের সভাপতিত্বে সংঘ প্রধান ও রাজবন বিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবীর সহ অন্যান্য ভিক্ষুগন উপস্থিত ছিলেন, দায়কের মধ্যে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহালছড়ি জোনের জোন অধিনায়ক লে. কর্ণেল শাহরিয়ার সাফকাত ভূইয়া (পিএসসি) সহ এলাকার দায়ক/দায়িকা বৃন্দ। 

স্বাগত বক্তব্য রাখেন অত্র বিহারের সভাপতি ও মহালছড়ি সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নিপুল বিকাশ খীসা। আরো বক্তব্য রাখেন জোন অধিনায়ক। তিনি অত্র বিহারের ভিক্ষুসংঘের সাথে শুভেচ্ছা বিনিময় ও উপহার সামগ্রী সহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন।

২য় পর্বে দুপুর ২ টার দিকে পঞ্চশীল প্রার্থনা ও গ্রহনের পর ভিক্ষুসংঘকে চীবর দান, কল্পতুরু দান, আকাশ প্রদীপ দান, হাজার প্রদীপ দান, বুদ্ধ মূর্তি দান ও নানাবিদ দান করা হয়। এছাড়াও জগতের সকল প্রাণির মঙ্গলার্থে বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।


উক্ত অনুষ্ঠানে ধর্মীয় দেশনা প্রদান করেন রাংগামাটি রাজ বনবিহারের অধ্যক্ষ প্রজ্ঞালঙ্কার মহাস্থবীর, নানিয়ারচর রত্নাঙ্কুর বনবিহারের অধ্যক্ষ বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবীর, ও পানছড়ি শান্তিপুর অরন্য কুটিরের অধ্যক্ষ শাসনরক্ষিত মহাস্থবীর।

ধর্মীয় দেশনায় ভিক্ষুরা সবাইকে বুদ্ধের পথ অনুসরণ করে ধর্মীয় নিয়ম কানুন মেনে চলার আহবান জানান। এছাড়াও কঠিন চীবর দানের ফল সম্পর্কে দেশনা প্রদান করেন ভিক্ষুরা।

উল্লেখ্য যে, কথিত আছে বুদ্ধের সময়ে বিশাখা কতৃক প্রবর্তিত হয় এই কঠিন চীবর দান। ভিক্ষুদের জন্য এক দিনের ভিতর চীবর তৈরি করে ভিক্ষুসংঘকে দান করা হয় এই কঠিন চীবর । তখন থেকেই বৌদ্ধ ভিক্ষুদের তিন মাস ব্যাপি বর্ষাবাসের পর প্রতিবছর একমাস ব্যাপি বৌদ্ধরা পালন করে আসছে এই কঠিন চীবর দানানুষ্টান।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ

সম্প্রতি

মহালছড়ি উপজেলায় খাগড়াছড়ি জেলা বি.এন.পি’র সাংগঠনিক সভা

দীপক সেন, মহালছড়ি প্রতিনিধি: পার্বত্যাঞ্চলে শান্তি, শৃংখলা বজায় রাখতে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অক্ষুন্ন রেখে আইন-শৃংখলা স্থিতিশীল রাখতে, প...